অনুগল্প - একজোড়া কালো তিলের গল্প, লেখক - আবদুল মালেক
একজোড়া কালো তিলের গল্প
আবদুল মালেক
একটা নার্সারি স্কুলের অফিস রুমে হঠাৎ দেখা মেয়েটার সাথে। প্রথম দেখাতেই মনে হলো সে আমার কত চেনা! কত সহজভাবে কথা বলছে!
আমি একপাশে লজ্জাবতী লতার মতো গুটি গুটি হয়ে বসে আছি।
মোটা গোল গাল চেহারা মেয়েটার। গায়ের রং শ্যামলা মুখটা পূর্ণিমা চাঁদের মতো গোল । ডাগর ডাগর দুটি চোখে আলো ঠিকরে পড়ছে।
ডান পাশের গালে ও থুতনির নিচে একটা বিন্দুর মতো কালো তিল যা মেয়েটার সৌন্দর্যটাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। মেয়েটা অন্যদের সাথে গল্পে ব্যস্ত। আমি এক নিমেষে তাকিয়ে আছি তার মুখের দিকে। অদ্ভুত একটা আকর্ষণে আমার দৃষ্টি তিলটায় আটকে গেছে।
অল্প কিছু দিনের মধ্যেই স্কুলের সবার সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠলো। কী জানি করে ওরা আমার অন্য একটা পরিচয় জেনেছে। আমি নাকি কবি। কবিতা লিখি।
মেয়েটার আমার আরও কাছে এলো। ওকে একান্ত আপন করে পাওয়ার একটা দুর্মর বাসনা মনের মধ্যে জেগে উঠলো। কিন্তু পাওয়া কোনো মতেই সম্ভব নয়।
কিন্তু অযাচিতভাবে মেয়েটা একদিন আমার আনন্দ সঙ্গী হল। কান্নাহাসি আনন্দ বেদনায় মেশানো দিনগুলো স্বপ্নের মতো কেটে গেল।
পূর্ণিমা চাঁদের মতো মুখটায় দুটি তিল। ওকে মনে হয়েছে তিলেশ্বরী। আমার অনেক দিনরাতের আনন্দের উৎস ভূমি গালের ওই তিল।
যে তিলটা ছিল আমার আনন্দের উৎস ভূমি, সেই তিলটাই আজ আমার আর ভালো লাগছে না। শংকায় বুক কাঁপছে। তিল দূটো আকারে দ্রুত বাড়ছে। আমি জানি তিল আঁচিল আর যাই হোক অত বড়ো হওয়া ভালো নয়।
No comments