একগুচ্ছ কবিতা
টিউবারকুলোসিস-এর চাঁদ ও আমি
আবদুল মালেক
টিউবারকুলোসিসের চাঁদের মত ক্ষয় হতে হতে
শীর্ণ শরীরে জাঁকিয়ে বসেছে শীত
কাঁপুনিটা থামছে না কিছুতেই
কল্পনার নকশি কাঁথাটা
বড় জীর্ণ হয়ে গেছে
ঈশান কোণেএকখণ্ড কালো মেঘ ছেয়ে ফেলে
আমার মনের আকাশ
সমুদ্রমন্থনে নামি অমৃত তুলে আনবো বলে
আলকাপের গানের অস্থায়ী মঞ্চে
ঝাড়বাতি টা ঘুরে ঘুরে
পাহাড় বন নদীর ছায়া ছবি দেখায়
নির্বাসিত রাজা রানীর দুঃখের জীবন
চোখে অশ্রু ঝরায়
আমি রাজা হতে চাইনি কোনদিন
উদাসী বাউল এর মতো কাটাতে চেয়েছি জীবন পথে প্রান্তরে
যোগ বিয়োগের অংকটা শেখা হলো না আজও
ঠকে ঠকে ফিরি বারবার
বেওকুফ বলে গাল পারে বন্ধুরা
আমি তখন কুবেরের বিষয় আশয় ছেড়ে
কবিতার ফুলবনে নিজেকে হারাই
ঠিক মাঝ সমুদ্রে দিশাহীন নাবিক
যেমন শুকতারা খোঁজে।
গোধূলি বেলার কবিতা
পতনোন্মুখ বিকেলের ম্লান আলো
তখনো শুয়ে বাঁশ, তাল, খেজুর গাছের পাতায়
আকাশের গায়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা মেঘ
পাখিদের ঘরে ফিরে সন্ধ্যা সংগীত
আযানের সুর শঙ্খ ধ্বনি দূর গাঁয়ে
আমি একা ছাদে ধ্যানগগ্ন দরবেশ যেন
কবিতার বীজ বুনছি মনের জমিনে
শ্রাবণী বৃষ্টিতে ভেজা বাতাসে
থরোথরো কাঁপছে মেহগনি পাতা
বাতাসের কানে যেন ফিসফাস
গে৺য়ো মানুষের চিন্তিত মুখ
যেন মেঘলা আকাশ
একটু পরেই শান্ত হয়ে এলো
বাঁশ বনে পাখিদের পাড়া
তবু থামবে না চলবেই মানুষের
চিন্তা উদ্বেগ আশা নিরাশায় মেশা
দিন যাপনের আটপৌরে হিসেব।
অযুত শব্দের কঙ্কাল
মানুষ স্বভাবতই খুনি
খুন করাটা তার রক্তে
খুন কেউ করে স্বভাবে কেউ অভাবে
ছোপ ছোপ রক্ত লেগে থাকে মুখে হাতে নখরে
সবাই বেশ মস্তিতে থাকে
হাসে গায় যা খুশি করে
আমিও ঠিক তেমনটাই ভাবি
মিশে যাব ওদের ভীড়ে
ভাববো না কোন কিছুই
ওরা তো বেশ ভালই আছে
আমিই বা পারব না কেন?
ভাবতে তো বেশ ভালই লাগে
কিন্তু পারি কই
মাঝরাতে একাকী ঘিরে ধরে আমাকে
নিহত অসংখ্য লাশের কঙ্কাল
তখন সে ইচ্ছে কথা স্বপ্নের অযুত কঙ্কাল
ভয়ে ভাবনায় বিহবল করে দেয় আমাকে
বৃশ্চিক দংশনে ছটফট করি বিছানায়।
No comments