Header Ads

কবিতা - শুধু তোমার জন্য, কবি - ফারুক আহমেদ

 


শুধু তোমার জন্য

ফারুক আহমেদ


এই সেহরির সকাল 

পাপমোচনে আত্মশুদ্ধি ফজরের নামাজ

দু’হাতে তুলে শেষ মোনাজাতে 

মার্জনা চেয়েছি মহান আল্লাহর দরবারে। 


জলের ঝাপটায় ধুয়ে যাচ্ছে 

লেগে থাকা বর্জ্য পদার্থের ছিটেফোঁটা 

ভয়ে কুঁকড়ে মুকড়ে

আছে উদাসী মন। 


নদীর ঢেউ ওঠে,

ভরাট ললাট অপেক্ষায় থাকে 

ভালবাসা, চুম্বনের জন্য।


শুধু তোমার জন্য... আত্মসংযম, 

অনেক ভালবাসা 

মনের আকাশ জুড়ে।


অফুরন্ত রূপ-যৌবন

গোপন চোখ

অপরূপা স্নিগ্ধ সকাল... 

উৎকণ্ঠিত দিন কাটে, রাত কাটে... 


তোমার আত্মার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার প্রতীক্ষায়...

প্রহর গুনে এই বেঁচে থাকা।



পরিচিতি:

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নাটাপুকুর গ্রামে ১৯৮৩ সালের ৭ মার্চ কবি, লেখক, সম্পাদক ও গবেষক ফারুক আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন। নাটাপুকুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার হাতে খড়ি। এরপর ঘটকপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভাঙড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান শাখায়) পাশ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত সুরেন্দ্রনাথ দিবা কলেজ থেকে স্নাতক হন। এম. এস. বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব লাইব্রেরি সায়েন্সও উত্তীর্ণ হন প্রথম বিভাগে। এরপর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স করেন। তারপর ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (প্রকাশনা ও পরীক্ষাসমূহের) পদে কর্মরত থাকার সময়ে ২০১৬ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক আহমেদ ইতিহাস বিভাগে পিএইচ ডি ডিগ্রির কাজ শুরু করেন। ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অলককুমার ঘোষকে গাইড হিসাবে পান ফারুক আহমেদ। তাঁর গবেষণার বিষয়, ‛স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে মুসলিম পরিচালিত মিশন স্কুলের অবদান’। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে স্নেহ করেন এবং তাঁর কাজে উৎসাহ দেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক (ড.) গৌতম পাল-এর কথা। উপাচার্য অধ্যাপক (ড.) মানস কুমার সান্যাল ফারুক আহমেদকে তাঁর গবেষণা ও প্রকাশনার কাজের প্রশংসা করেন। গ্রামের অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন ফারুক আহমেদ। বংশের মধ্যে তিনিই প্রথম পিএইচ ডি গবেষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন স্বনামধন্য কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিপূর্বে তাঁদের বংশের কেউ পিএইচ ডিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাননি। ফারুক আহমেদের সুযোগ্য সহধর্মিণী মৌসুমী বিশ্বাসও এডুকেশন বিভাগে পিএইচ ডি গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।

   ফারুক আহমেদ বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউজ লেটার ইনচার্জ ও রসায়ন বিভাগের অফিস কোঅর্ডিনেটর পদে কর্মরত আছেন। 

ফারুক আহমেদ ভাব ও ভাষা সমৃদ্ধ ষান্মাসিক সৃজন সাহিত্যের পিয়ার রিভিউড দ্বিভাষিক রিসার্চ জার্নাল ‘উদার আকাশ’ দুই দশকের বেশি সময় ধরে সম্পাদনা করছেন। কলেজে পড়ার সময় টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে, বন্ধু-বান্ধবীদের সহযোগিতায় প্রথম ‘উদার আকাশ’ (২০০২ সালে) প্রকাশ করেন। স্কুল জীবনে পড়ার সময় প্রথম সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি। ওই সময় কৃষিকাজ ও সংবাদপত্র বিক্রি করে কর্মজীবন শুরু করেন। 'উদার আকাশ' প্রকাশনা সংস্থা থেকে ইতিমধ্যে ১২১টির বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উভয় বাংলার গবেষক ও পাঠক দরবারে সমাদৃত হয়েছে 'উদার আকাশ' প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু সাড়া জাগানো গ্রন্থ। 

  ফারুক আহমেদের রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘বিশ্বপ্রেম’। ফারুক আহমেদ-এর সম্পাদনায় প্রবন্ধ সংকলন ‘প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়ন’, ‘ফুরফুরা শরিফের পয়গাম’, ‘কংগ্রেস ও বামশাসনে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক’, ‘পশ্চিমে সূর্যোদয় রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উলটপুরাণ’, ‘বিস্তীর্ণ আকাশ জুড়ে কাজী নজরুল ইসলাম’ এবং ‘বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম’। ইংরেজিতে লেখা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর একটি গবেষণা গ্রন্থও সম্পাদনা করেছেন ফারুক আহমেদ। ইতিমধ্যেই ফারুক আহমেদ সম্পাদিত ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ‘সংখ্যালঘু ও মুখ্যমন্ত্রী’, ‘মর্যাদার সন্ধানে’, ‘আত্মপরিচয়ের অন্বেষণ’, ‘আত্মবিকাশের দর্পণ’, ‘রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অনগ্রসর ও সংখ্যালঘু’, ‘মূল্যবোধের অবক্ষয়’, ‘ভূমিপুত্রদের জাগরণ’ এবং ‘কুৎসার জবাব উন্নয়ন’। রাজ্য রাজনীতিতে পালা-বদলের সন্ধিক্ষণে এই প্রয়াস বঙ্গবাসীকে সচেতন করেছে। আগামীতেও মানুষের মর্যাদার সন্ধানে 'উদার আকাশ'-এর প্রয়াস অটুট রাখতে তিনি দৃঢ়সংকল্প।

   ফারুক আহমেদ একাধারে কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং সমাজ সচেতন নাগরিক। সহজেই তিনি মানুষের মধ্যে মিশে যেতে পারেন। তাঁর এই বিরল প্রতিভা এবং মূল্যবোধের সংমিশ্রণ আমাদের সমাজকে সমৃদ্ধ করবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ‘উদার আকাশ’ কেবল পত্রিকা নয়, আত্মমর্যাদার অভিজ্ঞান, ‘উদার আকাশ’ কেবল স্লোগান নয়, সুস্থ সমাজ গড়ার অঙ্গীকার। ‘উদার আকাশ’ দিচ্ছে ডাক, ঘরে ঘরে সাহিত্যের আলো পৌঁছে যাক।

No comments

Powered by Blogger.