বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন ও কিছু আনুষঙ্গিক কথা , মজিবুর রহমান (প্রধানশিক্ষক, কাবিলপুর হাইস্কুল, মুর্শিদাবাদ)
বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন ও কিছু আনুষঙ্গিক কথা
মজিবুর রহমান, প্রধানশিক্ষক, কাবিলপুর হাইস্কুল
কাবিলপুর, মুর্শিদাবাদ,
অবিভক্ত বাংলার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের একটা ইতিহাস ছিল।১৯৪৭ সালে ভারত তথা বঙ্গবিভাজনের পর থেকে পূর্ববঙ্গে সেই পরম্পরার প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়। পূর্ববঙ্গের ভাষা আন্দোলন বিশ্ববাসীকে ১৯৫২ সালে এক রক্তস্নাত ২১শে ফেব্রুয়ারি উপহার দেয় যা ২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে।ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে পূর্ববঙ্গের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে নতুন দেশ বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা লাভের পর বিগত অর্ধ শতাধিক বছরে বহুবার বাংলাদেশের রাজপথকে রক্তাক্ত আন্দোলনে ব্যস্ত হতে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বাধিক সহিংস আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালেই সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ প্রথা প্রবর্তন করে। সংরক্ষিত আসন সংখ্যার শতাংশ নির্ধারিত হয় এরূপ: মুক্তিযোদ্ধা-৩০, নারী-১০, জেলা-১০, জনজাতি-৫, প্রতিবন্ধী-১, মোট ৫৬ শতাংশ। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর দুই দশক ধরে এই সংরক্ষণ বা কোটা স্থগিত রাখা হয়। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন এবং সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তন করেন। মুক্তিযোদ্ধা থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পর্যন্ত কোটা সম্প্রসারিত করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে কোটা প্রথা রদ করেন। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা শাসন ক্ষমতায় ফিরে আসেন এবং সেই সঙ্গে ফিরিয়ে আনা হয় সংরক্ষণ। ২০১১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদেরও সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়।২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের তীব্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হাসিনা সরকার জনজাতির জন্য ৫ শতাংশ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষণ বজায় রেখে বাকি ক্ষেত্রগুলো থেকে সংরক্ষণ তুলে দেয়। ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ই জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেয়। এর প্রতিবাদে ছাত্র সমাজ পথে নামে। আবার কোটা সংস্কারের দাবি ওঠে।সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিক ভাবে বলা হয় যে, আদালতের রায় নিয়ে সরকারের কিছু করার নেই। কিন্তু আন্দোলনের চাপে পড়ে সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে। সুপ্রিম কোর্ট ১০ই জুলাই হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে ৭ই আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে। ১৪ই জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা অনুষ্ঠানে আন্দোলনকারীদের খুব কড়া ভাষায় সমালোচনা করার পাশাপাশি বলেন যে, সংরক্ষণ মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না তো কি রাজাকারদের নাতিপুতিরা পাবে? তাঁর এই মন্তব্য আগুনে ঘি ঢালার সামিল হয়।আন্দোলনকারীরা তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করে স্লোগান দেয়, "চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার! তুই কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার! বলছে কে? বলছে কে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার!" আন্দোলন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সুপ্রিম কোর্টে কোটা মামলার শুনানি এগিয়ে আনা হয়। ২১শে জুলাই সুপ্রিম কোর্ট সরকারি চাকরিতে সাত শতাংশ কোটা রাখার কথা জানায়- মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে হাসিনা সরকার ২৩শে জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু সাত-আট দিনের আন্দোলনেই বাংলাদেশ কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। আবাসিক হলগুলো থেকে পড়ুয়াদের বের করে দেওয়া হয়।ভারত, নেপাল ও ভুটানের শিক্ষার্থীরা স্বদেশে ফিরে যান।গোলাগুলি, লাঠালাঠি, ইটপাটকেল ছোড়াছুড়িতে কমবেশি দুশো জন ছাত্র, পুলিশ ও সাধারণ মানুষ নিহত এবং দু'হাজার জন আহত হন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। প্রচুরসংখ্যক সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়। তাণ্ডবের শিকার হয় রাজধানীর মেট্রোরেল, টোল প্লাজা, টিভি'র কার্যালয়, ইন্টারনেটের কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, হাসপাতাল, কমিউনিটি সেন্টার। একটা জেলে হামলা চালিয়ে আটশো'র বেশি বন্দীকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ জারি করা হয়, সেনা নামানো হয়, দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরির প্রধান পরীক্ষা বিসিএস বা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। এটা একটা ত্রিস্তরীয় পরীক্ষা যা সম্পন্ন হতে প্রায় দুই বছর সময় লাগে। প্রথম পর্যায়ে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এখানে যারা কোয়ালিফাই করে তারা দ্বিতীয় পর্যায়ে লিখিত পরীক্ষায় বসে। এই মূল পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয় তাদের তৃতীয় পর্যায়ে সাক্ষাৎকার বা মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্ত সাফল্যের হার মাত্র দুই শতাংশের মতো। এই পরীক্ষার কোনো পর্যায়েই চাকরিপ্রার্থীদের কোটাগত সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং, চাকরির মেধা তালিকায় সত্যিকারের মেধাবী ছেলেমেয়েরাই ঠাঁই পায়। এজন্য কোটায় চাকরি প্রাপকরা একেবারে নিম্ন মেধার অথবা অযোগ্য, এমন মনে করা সঙ্গত নয়। ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে এখন সরকারি চাকরিতে ১৭ লক্ষ আসন রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার এক শতাংশের কম। এদিক থেকে দেখলে দেশের এক শতাংশেরও কম মানুষের জন্য চাকরিতে ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ অস্বাভাবিক বলেই মনে হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতি ও আন্দোলনে দুটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ হলো মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার। ইংরেজি 'ফ্রিডম ফাইটার' পশ্চিমবঙ্গে 'স্বাধীনতা সংগ্রামী' হলেও বাংলাদেশে 'মুক্তিযোদ্ধা'। তবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে একটুখানি ফারাক আছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম অহিংস ও সহিংস উভয় পথেই পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধ ছিল পুরোপুরি সহিংস। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন কয়েক দশক ধরে চললেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মূলত ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছিল। ১৯৭২ সালে ঘোষিত দ্য বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাইটারস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সংজ্ঞা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত যেকোনো সংগঠিত ফোর্স বা দলের সদস্য হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত কোনো সংগঠিত দলের সদস্য না হন অথবা হয়েও সক্রিয় ভূমিকা না রাখেন তবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন না। শাসকদলের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাতেও পরিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হয়েছে কিন্তু সেসব তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এবং বিতর্কের অবসান হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের একটি হিসাব অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার সর্বোচ্চ সংখ্যা এক লাখ তিরাশি হাজার। এখন হয়তো বেঁচে আছেন এক লাখ এবং তাঁদের সকলেরই সরকারি চাকরি পাওয়ার বয়স পার হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়েদেরও অধিকাংশের বয়স পার হওয়ার মুখে। এখন তাঁদের নাতিপুতিরা কোটার সুবিধা ভোগ করেন।
১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিরোধীদের একটা অংশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ছিল না। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদতে পাকিস্তানপন্থী বাঙালি এবং উর্দুভাষী অবাঙালি অভিবাসীদের নিয়ে '৭১ সালের মে মাসে খুলনায় গঠিত আধা সামরিক বাহিনী রাজাকার নামে পরিচিত হয়। রাজাকাররা পাক সামরিক বাহিনীকে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মতো দুষ্কর্মে সহায়তা করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর রাজাকারদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালায়।বিগত এক দশকে বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে দেখা গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ফার্সি রেজাকার শব্দের অর্থ হলো স্বেচ্ছাসেবক। রেজাকার অপভ্রংশে হয়েছে রাজাকার। বাংলাদেশে রাজাকার একটি অপমানসূচক শব্দ যার অর্থ বিশ্বাসঘাতক, প্রতারক বা দেশদ্রোহী।আল বদর ও আল শামস নামে আরও দুটি আধা সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর প্রায় এগারো হাজার জনের একটি তালিকা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সরকার প্রকাশ করলেও নানা ভুল ও অসঙ্গতি ধরা পড়ায় তা শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের যেকোনো আন্দোলনে ভারত বিদ্বেষী স্লোগান উঠতে দেখা যায়। এবারও আন্দোলনকারীদের মিছিল থেকে আওয়াজ উঠেছে, "ভারত যাদের মামাবাড়ি বাংলা ছাড় তাড়াতাড়ি।" আসলে শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ককে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভালো চোখে দেখে না। তারা অভিযোগ করে যে, হাসিনা ভারতের কথায় চলে। তাদের হাসিনা-বিরোধিতা ভারত-বিরোধিতায় পরিণত হয়।আবার বাংলাদেশে অনেক মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন আছে যারা মানসিকভাবে পাকিস্তানপন্থী। এরা সুযোগ পেলেই ভারতবিরোধী বক্তব্য পেশ করে। ক্রিকেট খেলাতে ভারতের পরাজয় ও পাকিস্তানের বিজয় কামনা করে। অনুরূপ কাণ্ডকারখানা অবশ্য ভারতেও ঘটতে দেখা যায়। এদেশের হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো কারণে অকারণে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে আনে। পাকিস্তান ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতলেও তাদের মুখ ভার হয়। যখন তখন বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করা হয়। 'ঘুসপেটিয়া' বলে অপমান করা হয়।
বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র এখনও যথেষ্ট বিকশিত হয়নি। এবছর জানুয়ারি মাসে টানা চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনার সরকার গঠিত হয়। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ গ্ৰহণ করেনি। চল্লিশ শতাংশের কম ভোট প্রদত্ত হয়। বিভিন্ন আন্দোলন পরিচালনা ও তা দমন করার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক ভাবধারার অভাব অনুভূত হচ্ছে। বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো ছাত্রকে গুলি করে মেরে ফেলা কোনো সভ্য সমাজের পুলিশের কাজ হতে পারে না।স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও দেশবাসীকে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের সমর্থক হিসেবে বিভাজিত করা সমীচীন নয়।সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে দুর্বৃত্তদের অনুপ্রবেশের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকে এব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদীদের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যাতে সম্পর্ক খারাপ না হয় তার জন্য উভয় দেশের নাগরিক সমাজকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
No comments