Header Ads

নাটক - হৃদয়ের ছোঁয়া, নাট্যকার - সামসুদ্দিন বিশ্বাস (মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)

 



নাটক - হৃদয়ের ছোঁয়া

 নাট্যকার - সামসুদ্দিন বিশ্বাস 

(মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)


[ রওশান আলি মণ্ডলের বাড়ি আভিজাত্য ফ্যামিলী। একমাত্র মেয়ে নাজমিন। একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত। রওশান আলি একজন ডাক্তার]

(বাড়িতে রোগী দেখতে ব্যস্ত )

[ তেনু ঘটকের প্রবেশ]

তে নু:- বাড়িতে আছেন ডাক্তার সাহেব?

রওশান ডাক্তার:- হ্যা, কে গো, এদিকে এসো। (বসতে দেয়) কি ব্যাপার?

তেনু :- শুনলাম! আপনার মেয়ে আছে? দেখতে শুনতে ভালো তাই বিয়ে দিবেন কি না জানতে ?

রওশান:- হা, মেয়ে যখন আছে তখন তো বিয়ে দিতেই হবে? কিন্তু ছেলেটি কোথাকার?

তেন :- ডিহিগ্রামের আইনুল সাহেবের ছেলে? ছেলেটি বি.এ পরীক্ষা দিয়েছে? দেখতে শুনতে ভালো, বাড়িতে টিউশন পড়ায়, আরও এই এলাকার নামি চিলড্রেনস অ্যাকাডেমির মাস্টার।

রওশান:- তেনু ভাই ! আমার একমাত্র মেয়ে নাজমিন। পড়াশুনায় ভালো। তুমি একটি ভালো ছেলের খোঁজ দাও? টাকা – পয়সা গাড়ী যত লাগে দিব। কোন চাকুরী ছেলে কিংবা সরকারি মাস্টার খোঁজ দাও।

তেনূ:- ঠিক আছে।

                   (প্রস্থান)

            (২)

[ স্কুল চারটের সময় ছুটি ]

নাজমিন:- বকুল তোমাদের বাড়ি যাব !

বকুল:- কেন?

নাজমিন:- তোমার ইংরেজীর খাতা টা নিতে হবে তাই !

বকুল:- ঠিক আছে এসো।

                    (প্রস্থান)

[সন্ধার সময় বকুলের বাড়ি যায় নাজমিন]

বকুল:- এসো নাজমিন ,মা বসতে দাও।

[মা আমিনা নাজমিনের জন্যে চা করে আনে]

নাজমিন:- আচ্ছা বকুল দা, তোমার ইংরেজী সাজেশন গুলো খুবই ভালো।

আমিনা:- চা খাও মা।[ঢেলে দেয়]

নাজমিন:- না মাসি মা চা খাবো না।

আমিনা:- তোমরা বড়লোকের মেয়ে মা গরীবের বাড়িতে কি চা খাবে?

নাজমিন:- না ও কথা বলবেন না , আমি এমনই তে চা কম খায়।

          [নাজমিন চা খেয়ে নেই ]

আচ্ছা বকুল দা আজ আমি তবে যায় রাত হয়ে যাবে।

               (প্রস্থান)

[বাড়ি নাজমিন পড়ার ঘরে]

              (ঘটকের প্রবেশ)

তেনু ঘটক:-ডাক্তার সাহেব বাড়িতে আছেন ?

রওশন ডাক্তার :- তেনু নাকি এসো ।

তেনু :-ডাক্তার সাহেব , আপনার মনের মতো জামাইয়ের সন্ধান পেয়েছি কিন্তু লেনদেন ঠিক হলেই হল ?

রওশন ডাক্তার :- কোথায় ? কেমন ছেলে ?

তেনু : জগতাই গ্রামের আমজাদ মন্ডলের ছেলে রামিজ মন্ডলের সাথে । ছেলেটি দেখতে শুনতে খুবই ভালো ।

রওশন ডাক্তার :-হ্যাঁ ,হ্যাঁ চিনি ! সে তোর সুতির ব্লকের জয়েন্ট বিডিও । এক বছর হলো নতুন চাকুরি আচ্ছা তেনু ভাই আমজাদ মন্ডল কি আমার মত পরিবারে কুটুম করবে ?

তেনু ঘটক :-কেন দেবে না! সে তো আমাকে একটি ভালো মেয়ের খোঁজ চেয়েছে ?

রওশন ডাক্তার :-তুমি যতই শীঘ্রই যোগাযোগ করো যেমন করে হোক ও রকম ছেলে হাতছাড়া করা যাবে না । আমার আদরের একমাত্র মেয়ে তার সুখী আমার সুখ।

           (সকলের প্রস্তান)

             (৩)

[ আমজাদ মন্ডলের বাড়ি, রামিজ হাতা পত্র নিয়ে কি যেন ভাবছে ]

          (তেনু ঘটকের প্রবেশ)

তেনু ঘটক :-বাড়িতে কি আসতে পারে মন্ডল সাহেব !

আমজাদ :- হ্যাঁ এসো, কি ব্যাপার তেনু মেয়ের খোঁজ আনতে পেরেছো তো। বল কেমন মেয়ে ?

তেনু ঘটক :-হুজুর, সাক্ষাৎ লক্ষ্মী , গুণে সরস্বতী । যেন হাতে গড়া পুতুল,এ তল্লাটে এত সুন্দর মেয়েই নাই ।

আমজাদ:-বলো, মেয়েটি কোথাকার ?

তেনু ঘটক :-শেরপুর গ্রামের রওশান ডাক্তারের মেয়ে নাজমিন। মেয়েটির আচার ব্যবহার মনের মতো।

আমজাদ:-হ্যাঁ চিনতে পেরেছি ! রওশান তো সামান্য একজন ডাক্তার , সে কি আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারবে? যতই হোক ছেলে তো একজন বিডিও অফিসার। কিন্তু যদি মোটরসাইকেল দিতে পারে এবং ছয় ভরি সোনা তাহলে ভাবা যাবে ।

তেনু ঘটক :- কেন পারবে না হুজুর! ওর তো একমাত্র মেয়ে ।

আমজাদ :-ঠিক আছে, তুমি কথা বলো এবং জেনে নাও ঠিকমতো সব পারলে যত শীঘ্র আমি বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলব ।

             (প্রস্তান)

              (৪)

 [নাজমিন এর সাথে রামিজ এর বিয়ে সম্পন্ন হল । বাবা কান্নায় ভেঙে পড়ে]

নাজমিন:-বিদায় দেন আব্বা গো

বিদায় দেন আমারে

 জন্মের মত মায়া ছেড়ে

 যেতে হল কোন দ্বারে

কেমন করে রইবো

আপনারে ছেড়ে।

বিদায় দেন ও আব্বা গো....

             [কান্নায় লুটিয়ে পড়ে]

কেমন করে রইবো আব্বা,

ও আব্বা আমি হলাম অবলা

জন্মের কালে মাতা হারা

আপনার স্নেহের ধারা

কেমন করে আব্বা

আপনারে ছেড়ে ...................।

রওশন ডাক্তার:- কেঁদো না কেঁদো না ও মাতা গো,

তোমায় ছেড়ে থাকতে হবে , বিধাতার লিখন।

শশুর পিতা সেই ঘরে বসত কর

সুখে থাকিও

নারীকূলে জন্ম নিলে যেতেহবে সবাই কে ।

কেঁদো না কেঁদো না মা,

মুছো চোখের জল ।

[বুকে তুলে নেই]

নাজমিন:-কে আপনারে গো আব্বা খাওয়াবে যতনে , নাজমিন চলে যাচ্ছে ? কে আপনারে করিবে যতন গো ,ও আব্বা সময় মত খাবার খেও আব্বা নইলে প্রাণে যাবে মারা গো।।

আমি চললাম জন্মের মত আপনাকে ছেড়ে ।

           (বিদায়)

           (৫)

আজ বাসর সজ্জা, দেখতে দেখতে রাত্রি বারোটা বিছানায় একা ফুল বধু নাজমিন জেগে আছে , ভাবছে রামিজ কেন এলো না, সে কোথায় কাকে জিজ্ঞেস করবে ভাবতে পারছে না।

[ মদমত্ত অবস্থায় রামিজের প্রবেশ ]

রামিজ: [টলছে] দরজা খোলো !

এহ শুনতে পাচ্ছো না ?

নাজমিন:-[দরজা খুলে দিয়ে] ওহ স্বামী কি হয়েছে আপনার, কেন এমন করছেন ?

         [হাত ধরে বিছানায়]

 হ্যাঁ গো, গন্ধ আসছে কেন ?

রামিজ:-এই শালী ! কি বললে গন্ধ হচ্ছে ? [চুলের ঝুটি ধরে] আমার মত স্বামী এ জন্মে পাওয়া কত ভাগ্যের আর বলছিস গন্ধ হচ্ছে ?

নাজমিন:-[কান্নায় ভেঙে পড়ে] মা, মা গো একি আমার কপালে ?

রামিজ:-এই চিৎকার করবি না ? [জুতো সমেত বিছানায় শুয়ে পড়ে] আমার ঘুমের ব্যাঘাত হবে !

নাজমিন :-স্বামী প্রথম জীবনে আপনাকে কাছে পেয়েছি, সে জনার দয়ায়। এমন করবেন না?

     [পায়ের জুতো খুলে দেয়]

কত আশা আকাঙ্ক্ষা জীবনের সাথে জড়িত, সকাল হলে লোকে কি বলবে ?

[রামিজ একটি চাদর নিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ে,]

  আপনি খাটে ঘুমান ?

 [নাজমিন চাদরটা মেঝেতে পেরে শুয়ে পড়ে ]

[ রওশন ভাবে দেখতে দেখতে একমাস হয়ে গেল। নাজমিনকে একবার দেখতে যাওয়া দরকার ।জামাইকে বলে একবার পনেরো দিনের মতো মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসবো ]

রামিজ: এ্যাটার্জি টা ভালো করে রাখো ?

নাজমিন :-[হাতে নিয়ে] কোথায় রাখবো

রামিজ:-[রেগে] আমার মাথায়!

নাজমিন :-আপনি তো চলে যাচ্ছেন অফিসে কিন্তু মাথাটা কি থাকবে ?

       (রামিজের প্রস্থান)

নাজমিন চিন্তায় মগ্ন হয়। হে খোদা কি করলে তুমি রামিজকে সৎপথে পরিচালিত কর । আবার বাবার উপর দুঃখ হয় বড়লোকের ছেলের সাথে বিয়ে? জামাই বড়লোক কত সম্মান ! আবার ভাবে ফটিকের সাথে যদি বিয়ে হত তাহলে এত কষ্ট হতো না? সে কত আদর্শবান যুবক । হ্যাঁ পিতা এই তোমার আশা? কিন্তু তোমার আদরের নাজমিনকে একবার দেখো?

[রওশনের প্রবেশ]

রওশান:-কই রামিজ বাবাজি? [নাজমিন বেরিয়ে এসে]

নাজমিন:-আব্বাজান ! হ্যাঁ আসেন। [বসতে দেয়] আব্বা, আমাকে ভুলে গেলেন এখন সময় পেলে ?

রওশান :-মাগো ! রোগী দেখার কাজ ফেলে সহজে আসতে পারি না । রোজই ভাবি একবার দেখে আসব। সময় পেরে পেরে উঠতে পারছি না ।

নাজমিন :-আব্বা ,আপনি মায়া কেটে দিয়েছেন ! তাই না

রওশান:-ও কথা বলিস না মা ! স্নেহের ধারা কি কখন ভেঙ্গে যায় এ কি মা তোমাকে এত রোগা লাগছে কেন ? তোমার কি শরীর ভালো নেই ?

নাজমিন :-ভালোই আছে আব্বাজান, [মাথা নিচু] তুমি চেয়েছিলে আব্বা বাড়ির বড় লোক জামাই, তাই না কিন্তু আব্বা সত্যিই তারা বড়লোক !

রওশান :-এ কি বলছিস মা নাজমিন তুই আমার একমাত্র মেয়ে ! তোকে নিয়ে আমার কতই স্বপ্ন ছিল বল মা, তোর এমন দশা কেন তারা তোকে ভালোবাসে না !

নাজমিন:-বাসে বাবা, তারা বড়লোক দিনরাত ভালো খাবারের ডুবে থাকে ! সুখে নিদ্রা যায় ।

রওশান :-এমন কেন করছিস না !

নাজমিন :-ধন সম্পদে কেউ পৃথিবীতে সুখী হয় না ? সুখের জন্য মায়া মমতা ভালবাসা দরকার। তোমার ইচ্ছায় পূরণ হলো আব্বা, তোমার নাজমিন বিরাট ধনী বাড়ির বউ !

রওশান :-বলো মা তুমি খুলে, কে তোমাকে জ্বালাতন করে ?

নাজমিন :-সবাই তো ভালবাসে আব্বা, নারীর সুখের জন্য বিয়ের ব্যবস্থা। কিন্তু যে স্বামীর সাথে বিয়ে দিয়েছো এক হলো লম্পট নেশারি। কোথায় যে রাত কাটাই তার ঠিক ঠিকানা নেই ?

রওশান :-একি বলছো মা ! আমি তোমার সুখের জন্য একজন চাকুরী জীবি খুঁজে ছিলাম ! মা ,কিন্তু আমি কোনদিন ভাবতে পারিনি। যে তোমার কপাল এত মন্দ হবে । আচ্ছা মা তোমার শ্বশুর মশাই কিছু বলে না ছেলেকে ?

নাজমিন:- বাবা, ছেলে যখন চাকুরী করে মোটা মাইনে বাবার হাতে দেয় তাহলে কি সেই ছেলে কে কেউ কিছু বলতে পারে? কোন কোন দিন যখন শ্বশুরমশাইকে বলতাম তখন আমারই দোষ , ছেলেকে শাসন করা দূরের কথা ?

রওশান :-দেখা যাক, তোমার শ্বশুর মশাই কে বলে কিছু দিনের মতো বাড়ি নিয়ে যাব ।

        [রামিজের প্রবেশ]

[টলতে টলতে বাড়ি ঢুকে]

রামিজ:-এই নাজমিন, [টলে পরে] শুনতে পাচ্ছ না ?

[নাজমিন ছুটে আছে]

নাজমিন :-ওগো কিছু বলো না? শুনো , আব্বা এসেছে লজ্জা দিবে !

রামিজ :-এই শালী ! আমি কারো খাই না দাই যে আমাকে লজ্জা দিবে ! হ্যাঁ বল,তোর বাপ কেন এলো ।

নাজমিন :-আমাকে নিয়ে যেতে এসেছে,আমি আজই আব্বার সাথে চলে যাবো?

রামিজ :-কেন যাবি? আমি কি তোকে খেতে দিই না? না যেতে পারবি না ?

নাজমিন :-কেন পারব না! আমি যাবই ! কোন আশায় তোমার কাছে থাকবো

রামিজ:-শোন যাবি না আমি তোকে নতুন শাড়ি কিনে দিবো !

নাজমিন : [কেঁদে] হ্যাঁ তোমার বাড়িতে শাড়ি, কাপড়, খাওয়া দাওয়া কোনই অভাব নেই। একজন দাসীবাদী যেভাবে খেতে পাই আমিও সেই ভাবে খাই। তবুও দাসীর স্বাধীনতা আছে আমার নাই !

রামিজ:-কি বলতে চাইছো?

নাজমিন:-আমি চাইছি তুমি নেশা করতে পারবে না একজন ভদ্রলোক যেভাবে জীবন যাপন করতে চাহে সে ভাবে করবে। আমার কত গর্ব তোমার মতো স্বামী পেয়েছি তোমার সাথে সুখ দুঃখের গল্প করবো আনন্দে জীবন কাটাব কিন্তু কোন দিনেই তোমার হাসি মুখ দেখতে পেলাম না যখনই বাড়ি ঢুকো মনে হয় তুমি আমার উপরে রেগে থাকো ! যদি তোমার অপছন্দ হতাম আমাকে বিদায় করে দিতে তাতেও শান্তি পেতাম।

    [ বলতে বলতে দাঁতি লেগে গেল, অজ্ঞান ]

রামিজ: এ কি নাজমিন, এ কি হল তোমার [মুখে হাত দেয়] কথা বল! কোন সাড়া নেই নাজমিন ........... কে কোথায় আছো ছুটে এসো ! আমার নাজমিন কথা বলছে না........!

         [বাড়ির সকলে হাজির]

মা: বৌমা...... [হাত দিয়ে] কি হলো তোমার...... [মাথায় জল ঢাল]

        [কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরে]

নাজমিন:-সবাই কেন.... এখানে কি হয়েছে.........!

সকলে :-এতক্ষণ তোমার কোনই জ্ঞান ছিল না ।

নাজমিন :-আব্বা কই ?

রওশান:-কি মা

নাজমিন:-আমাকে নিয়ে যাবে না ?

রওশান :-নিয়ে যাব, নিশ্চয়ই নিয়ে যাব মা ।

রামিজ :-না আব্বাজান (শ্বশুরকে) । নাজমিন সুস্থ হোক তখন তাকে নিয়ে গিয়ে বেরিয়ে আসবো ।

     [নাজমিন তাকিয়ে থাকে রামিজের দিকে]

রওশান:-বাবাজি, না হয় কিছুদিন আমার বাড়ি থেকে নাজমিন বেরিয়ে আসুক ।

রামিজ:-নাজমিন, এখন যেওনা কালকে তোমাকে মহেন্দ্রপুরে নিয়ে গিয়ে ভালো ডাক্তার দেখাবো....... পরে যেও ।

নাজমিন :-ঠিক আছে ।

রওশান :-আচ্ছা জামাই বাবাজি আজ তবে যাই ।

রামিজ :-এখন যেতে পারবেন না যখন এসেছেন তখন দু এক দিন থাকবেন ।

রওশান :-না আমার কাজ আছে

                (প্রস্থান)

            (৬)

[চা তৈরি করে কাপ হাতে স্বামীর ঘরে, স্বামী রামিজ পেপার পড়ছে ]

নাজমিন:-(চায়ের কাপ প্লেট হাতে দিয়ে) এই নিন চা ।

রামিজ:-[হাতে নিয়ে] বসো দাঁড়িয়ে থাকলে যে !

নাজমিন:-বাবাকে চা দিতে হবে ?

রামিজ :-যাও তাড়াতাড়ি বাবাকে চা দিয়ে তুমি এসো ।

        [নাজমিনের প্রস্তান ]

সত্যি, নাজমিন এত সুন্দর চা করতে পারে, আমি ভাবতে পারি না। মনে হচ্ছে যেন স্বর্গের সুধা পান করছি।

       [নাজমিনের প্রবেশ]

রামিজ :এলে, কই তোমার হাতে চা কই ?

নাজমিন :-আমি চা খাব না ।

রামিজ:-কেন খাবে না? না চা ছিল না ?

[হাতের কাঁপে অবশিষ্ট চা নিয়ে]

আমি তো এটো করে দিয়েছি, এক কাজ করো আরোও এক কাপ চা তৈরি করে নিয়ে এসো ।

নাজমিন :-কেন, আমি কি তোমার এটো খেতে পারিনা !

[ হাত থেকে নিয়ে চুমুক দেয় ]

রামিজ :-(অনুশোচনায় পরে) নাজমিন, তুমি আমাকে ক্ষমা করো ! তোমার সাথে আমি ভালো ব্যবহার করিনি । বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নেশায় পাগল ছিলাম, তোমার ওপর জুলুম চালিয়েছি !

নাজমিন:-ও কথা বলবেন না স্বামী, একজন নারী যেমন স্বামী রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেই, তেমনি স্ত্রীর কর্তব্য স্বামী অধঃপতনের হাত থেকে ফিরিয়ে আনা । আমি তাই করেছি স্বামী । তোমার ভালোবাসায় আমার পরম শান্তি, আমার মতো কোন নারী যদি ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে তাহলে সে একদিন অবশ্যই সুখে থাকবে ।

            সমাপ্ত

No comments

Powered by Blogger.