কবিতাগুচ্ছ - হুমায়রা সুলতানা হিমি ( বাংলাদেশ)

 



শ্রাবণে
হুমায়রা সুলতানা হিমি

শ্রাবণের এই অবেলায়,
কে যে এল অসময়!
ঘন কালো মেঘের ছায়ায়,
দ্রুতি সম্পূর্ণ বৃষ্টির ফোটায়।
আকাশ জোড়া শ্রাবণের মেঘ,
রংধনু তার বিষন্নতা।
অঝড়ে নামবে বুঝি, ঝড়াবে ব্যকুলতায়।
আজ মন আবেগী হয়ে,
ছুটে চলে তারই ধারে।
বাগানের মিষ্টি কদমফুলে,
তোমার নিঝুম আশাগল্পে।
শ্রাবণের আমন্রণে ,
আমি ভালোবাসি তোমাতে।
প্রান্তে উপর নির্ভর দুজনে,
একত্বে বরেণ্য তুমি,শরণ্য এককে আমি
আত্নায় আত্নীয় প্রিয় নীরবে।
চাহিয়া আকাশ প্রাণে,
ফিরিয়া আসছে কি আজ সে  শ্রাবণে!


ভালোবাসার তুমি
হুমায়রা সুলতানা হিমি

তুমি আমার জ্যোসনা রাতে চাঁদ
তুমি আমার আধার  কালো মেঘ।
তুমি আমার প্রাণময় গতিবেগ।

তুমি আমার খেলার সাথী মনোচ্ছেস,
তুমি আমার যমযম রাতের জোঁনাকি।
তুমি আমার কবিতা আবৃত্তি।

তুমি আমার মেঘমল্লার পূণিমা শশী,
তুমি আমার ফুলের মালা নাকি
হিমালয় ধরতে মানা ।

তুমি আমার সৌরভ  সুবাস,
তুমি আমার রোদেলা দুপুর ক্লান্তির অবসাধ।
তুমি আমার নিঝুম বৃষ্টির ফোঁটা,
তুমিই সারাবেলা।

তুমি আমার নতুন জীবন, নতুন উদ্যবেগ।
তুমি আমার শিমুল তুলো,কৃষ্ণচূড়ার রং।
তুমি আমার ভালোবাসা, তুমি আবার আবেগ।
তুমি আমার ওগো প্রিয় নতুন অনুবেস।


করোনার পৃথিবী
হুমায়রা সুলতানা হিমি

 এই তো সবাই ভালো ছিল,
পৃথিবী  ছিল সুন্দর ।
হঠাৎ করে কি যে হলো,
বদলে গেলো সব।

কৃষক নেই কৃষি কাজে,
রাত দিন টেনশন...
এখন আর তাঁতি  বুনে না কাপড়,
কামার - কুমার তৈরি করে না লৌহা,  পুতুল।

এখন আর খেলার মাঠে নেই কোনো ব্যাট-বল
সবই এখন প্যাকেট করা পুরো বাড়ি -ঘর।

বাজার আর মিলে না বাজারের মতো,
বড় বড় জাহাজ গুলো রয়েছে আটক।

ব্যাংক না খুলে কেউ তারা এখন আটিএম ভুত,

ছোটো ছোটো শিশু ছেলে মেয়ে যারা,
বাবা- মাকে কাছে পেয়ে খুশি আজ তারা।

কেউ না পা দেয় বিদেশ ভ্রমণ,
এখন বিমানবন্দর সবই বন্ধ।

সবাই যখন বাড়ি বসে হচ্ছে বোর,
কেউ তখন গান গায়, কেউবা  লিখে কবিতা
কেউ শিখে রান্নাবান্না, কেউবা দেখে মুভি।

সচেতনতার বাণীতে সারদিন সশস্রবাহিনী,

চারদিকে যখন মৃত্যুর মিছিল,
তখন সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার - নার্সিং।

প্রতিদিনই আপডেট হয় খবর,
এক  যলক দেখার জন্য অপেক্ষা করে হাজারো মানুষ....

নেই ঘুম, নেই কাজ, এই হলো করোনার পৃথিবী।




কে  তুমি  ভাই?
হুমায়রা সুলতানা হিমি

কে  তুমি  ভাই? 
তুমি কি ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর নাকি অন্য কেউ!

তুমি কি স্বাধীন বাংলার সার্বভৌম নাগরিক,
নাকি তুমি কোনো নামি-দামি রাজনৈতিক নেতা?

কিসের এতো গুন তোমার,
তুমি কি আবিষ্কারক নাকি এক সেবক!

কিসের এতো অহংকার তোমার, 
তুমি কি আরব দুলাল,
নাকি কোনো এক অদৃশ্য শয়তান?

তোমার কি এমন ক্ষমতা,
তুমি কি অনেক কিছুর মালিক?
নাকি তা আর কিছুই না!

তুমি কি এক অসাধারণ মানুষ!
প্রয়োগ করে দেখাতে পারো অনেক কিছু? 

কী  গর্বে -গৌরবে রয়েছো তুমি,
কোনো ইমাম নাকি পুরোহিত, ঋষি-বামুন।
নাকি কোনো শিরে চূর্ণ মেঘ!

তুমি কি আসলেই জলবিন্দু,বিশ্বমূলে অনু
স্বরূপ তোমার নিত্য অভিনব। 

তুমি কি ভাই বীর?
চলতে পারো বিদ্যুৎ -মোহন। 
জ্বলতে পারো ঔ নীল আকাশের তারার মতোন!

তুমি কি জ্ঞানের আলোয়, 
হতে পারো না আলোকিত।
নাকি পুষ্প নিবাসনের মতো কাটো সারাক্ষণ!

তুমি কি শীতের কুয়াশার সেই চাদর,
যা পরে থাকা যায় অবিরম? 

তুমি কি কোনো এক রাজ্যর  রাজা,
আসে কি তোমার এক পঙ্ নখির   ঘোড়া?

তুমি কি শঙখমালার সেই রূপ?
যার অপেক্ষা করে আছে নবীন-প্রবীণ মুখ ।

তুমি কি বিশালক্ষীর মতো দিতে পারো বর!
নাকি আজও কেড়ে নিতে এসেছো সব।

তুমি কি বিষাদময় রিক্ততার সুর,
প্রতীকায় বসে আছো সারাক্ষন।

এতো কিছুর পরও তো বলোনা,
আসলে কে তুমি ভাই?





সেই মহানারী
হুমায়রা সুলতানা হিমি

চারদিক যখন অশান্ত,
ঠিক তখনি গুলাগুলি হত্যাকান্ড
  কিভাবে বাঁচবে পৃথিবী!
     উল্ট -পাল্ট যেসব।
বাঁচাও! বাঁচাও!বাঁচাও!
    সহেনা আর এইসব কমর্কান্ড
দিকে দিকে বাড়ছে যে কোলাহল।
সবাই যখন নিজের বুঝে,
ঠিক তখনি বাড়ছে এক মহানারী
চোখে তার প্রতিশোধের নেশা,
মুখের ধোঁয়ায় যেন আগুন জ্বলা ।
তবুও চারপাশ যখন অস্থির,
কেউ না চিনে  মানুষ।
সবাই নিঃস, বিস্তৃত হয়ে পড়ে।
ঠিক তখনি  জাগ্রত হয় সেই মহানারী
সেখানে মানুষের সবটুকু ঠকিয়ে,
জীবনকে করে তুলে বিষের মতো,
যখন চারদিক করে হাহাকার!
ঠিক তখনি জাগ্রত হয় সেই মহানারী।


লেখক পরিচিতি: হুমায়রা সুলতানা হিমি ২০০২ সালে ৫ই আগস্ট মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার পূর্ব ভাকুম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজদিয়া অভয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে ম্যাট্রিক এবং শ্রীনগর সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। 
তিনি সিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি নিয়ে বি.এ(অনার্স) স্নাতক ডিগ্রী লাভ  করেন।  বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে এম. এ. ইন ইএলটি নিয়ে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত আছেন। কলেজ জীবন হতেই তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। বাস্তব জীবন ও আধুনিক জীবনচেতনা তার কবিতায় ফুটে উঠেছে। তিনি কলেজ জীবনে স্বরচিত কবিতা লিখে কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছেন।

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Tanvir Mostafa
    Tanvir Mostafa 14 July 2025 at 06:59

    Excellent work

  • Anonymous
    Anonymous 15 July 2025 at 21:10

    কবিতাগুলি অনেক ভালো লাগলো 😍

Add Comment
comment url